জাপানে প্রথমবারের মতো শতকরা ১০ ভাগের বেশি মানুষের বয়স ৮০ বছর বা তারও বেশি। সরকারি এক ডাটায় এমনটা বলা হয়েছে। এমনিতেই দ্রুত প্রবীণ মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বিগ্ন জাপান। তার মধ্যে এ খবর তাদেরকে আরও ভাবিয়ে তুলেছে। বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর দিয়ে বলছে, আজ সোমবার জাপানে ‘রেসপেক্ট ফর এজড ডে’।

অর্থাৎ প্রবীণদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য জাতীয় ছুটি। তার আগে রোববার সরকার ডাটা প্রকাশ করে। তাতে দেখা যায়, ৬৫ বছর বা তারও বেশি বয়সী জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে শতকরা ২৯.১ ভাগ। এক বছর আগে এই হার ছিল শতকরা ২৯। তবে এক্ষেত্রে বিশ্বে এই বয়সসীমার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দেশ হলো ইতালি। সেখানে এই বয়সসীমার শতকরা হার ২৪.৫। অন্যদিকে তৃতীয় অবস্থানে থাকা ফিনল্যান্ডে এই হার শতকরা ২৩.৬। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে। তাতে বলা হয়েছে, বিশ্বের মধ্যে শতকরা হিসেবে সবচেয়ে বেশি হারে প্রবীণের সংখ্যা জাপানেই।


উল্লেখ্য, কয়েক দশক ধরে জাপানের জনসংখ্যা কমে আসছে। এর ফলে সেখানে তরুণ বা যুব সমাজের চেয়ে বয়স্কদের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তরুণরা বিয়ে করছে বিলম্বে। চাকরিক্ষেত্র অস্থিতিশীল এবং অর্থনীতি সংকটে। এসব কারণে তারা বিয়ে করলেও সন্তান নেয়ার ক্ষেত্রে অনীহা রয়েছে। প্রবীণদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের দেখভাল খাতে খরচও ফুলেফেঁপে উঠছে। তরুণ সমাজ বিভিন্ন সামাজিক খরচ এবং জনকল্যাণমূলক কর্মসূচিতে ব্যয়ও করতে পারছে না। মন্ত্রণালয় বলছে, সন্তান নিতে অনীহা থাকা এই জনসংখ্যা দ্রুত ৭৫ বছর বা তারও বেশি বয়সী জনসংখ্যায় পরিণত হচ্ছে। ১২ কোটি ৪৪ লাখ মানুষের এই দেশটিতে ক্রমশ বাড়ছে বয়স্কদের সংখ্যা। এতে আরও বলা হয় ১ কোটি ২৫ লাখ ৯০ হাজার মানুষ ৮০ বছর বা তারও বেশি বয়সী। অন্যদিকে ২ কোটি মানুষের বয়স ৭৫ বছর বা তারও বেশি। এর ফলে প্রবীণ শ্রম শক্তির ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে জাপানকে।

কমপক্ষে ৯০ লাখ প্রবীণকে কাজ করতে হচ্ছে। মোট কর্মশক্তিতে তার শতকরা হার ১৩.৬ ভাগ। জাপানে প্রতি ৭ জন কর্মজীবীর মধ্যে একজন এই প্রবীণ। দেশটিতে সব প্রবীণের মধ্যে এক চতুর্থাংশকে কাজ করতে হয়। দক্ষিণ কোরিয়াতে এই হার ৩৬.২ ভাগ। যুক্তরাষ্ট্রে শতকরা ১৮.৬ ভাগ। ফ্রান্সে শতকরা ৩.৯ ভাগ। ৭০ থেকে ৭৪ বছরের মধ্যে যেসব জাপানি আছেন তাদের এক তৃতীয়াংশের বেশিকে কাজ করতে হয়। প্রক্ষেপণে বলা হয়েছে, ২০৪০ সালের মধ্যে জাপানে প্রবীণ জনসংখ্যার শতকরা হার দাঁড়াবে ৩৪.৮ ভাগ।